সূচিপত্র
রিয়াদুস সালেহীন বাংলা (সব খন্ড) PDF
প্রশ্ন | উত্তর |
---|---|
নাম | রিয়াদুস সালেহীন বাংলা |
লেখক | ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ.) |
অনুবাদক | মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান |
প্রকাশনী | ইসলামিক সেন্টার |
খন্ড | মোট ৪ টি |
ভাষা | বাংলা |
ISBN | 978-984-96426-8-8 |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | ২৪৭ পৃষ্ঠা |
ফরম্যাট | |
সাইজ | 18 MB |
রিয়াদুস সালেহীন কিতাবের পরিচিতি
রিয়াদুস সালেহীন কিতাবটি হাদিস শাস্ত্রের অন্যতম একটি গ্রন্থ। কিতাবটি তার অরণ্য বৈশিষ্ট্যের কারণে নিয়মিত হাদিসপ্রেমীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রেখে আসছে। বিশেষ করে এই কিতাবের যে সংকলন পদ্ধতি তার খুবই মার্জিত। এত সুন্দর বিন্যাসে হাদিসের কিতাব খুব কমই পাওয়া যায়। পাশাপাশি এরমধ্যে প্রায় গুরুত্বপূর্ণ সবগুলো বিষয় চলে এসেছে।
ইবাদত, আহকাম, মো'আমালা মো'আশারাত সহ আধ্যাত্ম্য বিষয়ক অনেক অধ্যায় ও পরিচ্ছেদ কিতাবটিতে রয়েছে এবং এই কিতাবটিতে হাদীসের পাশাপাশি পবিত্র কুরআনের বিষয়ভিত্তিক আয়াত গুলোও উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি রিয়াদুস সালেহীন কিতাবটি দরসে রসে নিজামীর অনেক মাদ্রাসাতে জালালাইন জামাতে অধ্যায়ন করানো হয়। এবং হাদিস মুখস্ত করার জন্য কিতাবটি খুবই নির্ভরযোগ্য একটি মাধ্যম হতে পারে।
রিয়াদুস সালেহীন কিতাবের কিছু বৈশিষ্ট্য
ইমাম নববী (র)-এর জীবন বৃত্তান্ত; লেখক পরিচিতি
ইমাম নববীর পুরো নাম ও বংশানুক্রম হচ্ছে :
মুহীউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহ্ইয়া ইবনে শারাফ ইবনে মারী ইবনে হাসান ইবনে হুসাইন ইবনে মুহম্মাদ ইবনে জামাই ইবনে হিযাম আন্- নববী।
তাঁর মূল নাম হচ্ছে: ইয়াহ্ইয়া, ডাকনাম আবু যাকারিয়া এবং উপাধি মুহিউদ্দীন।
হিজরী ৬৩১ সনের মুহাররাম মাসে দামিশকের সন্নিকটে নবী নামক জনপদে তাঁর জন্ম। শৈশবকাল তাঁর নিজের পল্লীতে অতিবাহিত করেন।
শিক্ষা জীবন
তাঁর লেখা-পড়ার শুরুও এখানেই হয়। আরবী বর্ণমালা শিক্ষা, আল কুরআন তিলাওয়াত ও হিফযুল কুরআনের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর শিক্ষা জীবনের উদ্বোধন করেন।
শৈশব ও কৈশোরে খেলাধূলার প্রতি তাঁর কোন মনোযোগই ছিল না। সমবয়সী ছেলেরা তাঁকে খেলার জন্য আহবান করলে তিনি তাদের সাথে যেতেন না এবং তারা এজন্য পীড়াপীড়ি করলে তিনি কেঁদে ফেলতেন। যৌবনের প্রারম্ভে পিতা তাঁকে নিজের সাথে ব্যবসায়ে লাগাবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পিতা অনুভব করেন পুত্র যাকারিয়ার মধ্যে জ্ঞানার্জনের ব্যাকুলতা। পুত্রের উন্নত মানসিক বৃত্তি ও অসাধারণ ধীশক্তি তাঁকে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি পুত্রের উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে তাকে নিয়ে তৎকালী জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্র দামিশকে চলে আসেন। এখানে ইমাম নববী প্রসিদ্ধ উস্তাদ কামাল ইবনে আহমাদের কাছে শিক্ষা লাভ করতে থাকেন।
এ সম্পর্কে ইমাম নববী (র) নিজেই লিখেছেনঃ “আমার বয়স যখন ১৯ বছর তখন আব্বাজান আমাকে দামিশকে নিয়ে গেলেন। সেখানে পৌঁছে আমি রওয়াহা মাদ্রাসায় ভর্তি হলাম। দুই বছর এখানেই অবস্থান করলাম। খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয়তার দায়িত্ব মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পালন করত। জ্ঞান অর্জনের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ এমনকি উস্তাদদেরও মুগ্ধ করেছিল। ৬৫০ হিজরীতে তিনি তাঁর পিতার সঙ্গে হজ পালন করতে যান এবং সেখানে প্রায় দেড় মাস মদীনা মুনাওয়ারায় অবস্থান করেন।
আতাউদ্দীন ইবনে আতা বর্ণনা করেন, শায়খ নববী তাঁকে বলেছেন যে, তিনি নিজের উস্তাদের কাছে প্রতিদিন ১২টি বিষয় পড়তেন। তার মধ্যে প্রধান বিষয়গুলো ছিল :
- আল-জাম্উ বাইনাস সহীহাইন,
- সহীহ মুসলিম,
- নাহু,
- সরফ,
- মানতিক,
- উসূলে ফিক্হ
- ও আসমাউর রিজাল।
স্মরণশক্তিও তাঁর ছিল অসাধারণ। ফলে কোন বিষয় একবার পড়লে তা তাঁর স্মৃতিপটে অক্ষয় হয়ে থাকত। হাদীস ও ফিকহের জ্ঞানানুশীলনের মধ্যে তিনি আত্মার তৃপ্তি অনুভব করতেন। তিনি নিজের যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসদের থেকে হাদীসের জ্ঞান লাভ করেন এবং একই সাথে ফিক্হ উসূলে ফিক্হ ও মানতিকেও পারদর্শিতা অর্জন করেন।
ইমাম নববী রহ. এর ওস্তাদবৃন্দ
ইমাম নববী বহুসংখ্যক উস্তাদের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেন।
তাঁর কয়েকজন শ্রেষ্ঠ উস্তাদের নাম দেয়া হলো :
- আবু ইবরাহীম ইসহাক ইবনে আমহদ আল মাগরিবী আবু মুহাম্মদ আবদুর রহমান ইবনে নূহ আল মাকদিসী
- আবু হাফস উমার ইবনে আসআদুর রিবঈ
- আবুল হাসান আরশিলী
- আবু ইসহাক ইবরাহীম মুরাদী
- আবুল বাকা খালিদ ইবনে ইউসুফ নাৰিসী
- দিয়া ইবনে তাম্মাম হানাফী
- আবুল আব্বাস আহমাদ মিসরী
- আবু আবদিল্লাহ জিয়ানী
- আবুল ফাহ উমার ইবনে বুন্দার
- আবু ইসহাক ওয়াসিতী
- আবুল আব্বাস মাকদিসী
- আবু মুহম্মাদ তানূখী
- আবু আবদির রহমান আনবারী
- আবুল ফারাজ মাকদিসী
- আবু মুহম্মদ আনসারী
ইমাম নববীর রাহ. এর মৃত্যু
৬৭৬ হিজরীতে বাইতুল মাকদিস সফরশেষে নিজ গ্রামে ফিরে এসেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় ১৪ রজব বুধবার রাতে ইস্তকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
ইমাম নববী রহ. রচিত গ্রন্থ সমূহ
ইমাম নববী (র) তাঁর ৪৫ বছরের জীবনকালে অসংখ্য মূল্যবান গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন।
এর মধ্যে কয়েকটির নাম:
- সহীহ বুখারীর শারহে কিতাবুল ঈমান অর্থাৎ সহীহ বুখারীর কিতাবুল ঈমান অধ্যায়ের ব্যাখ্যা গ্রন্থ।
- আল-মিনহাজ ফী শারহে মুসলিম ইবনিল হাজ্জাজ অর্থাৎ মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যা। এ গ্রন্থটি সম্পর্কে ইমাম নববী নিজেই বলেছেন: 'যদি বইটি লম্বা করার কারণে আমার শক্তি ক্ষয় হওয়া এবং পাঠকদের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকতো, তবে আমি এই গ্রন্থটি একশো খণ্ডে শেষ করতাম। তবে সবদিক বিবেচনা করে, আমি এটি মধ্যম আকারে সীমাবদ্ধ রেখেছি। বর্তমানে আরবিতে এই বইটি দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়।।
- রিয়াদুস সালেহীন।
- কিতাবুর রওদাহ। এটি শারহে কবীর রাফিঈ গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত রূপ।
- শারহে মুহায্যাব।
- তাহযীবুল আসমা ওয়াস সিফাত।
- কিতাবুল আযকার।
- ইরশাদ ফী উলূমিল হাদীস।
- কিতাবুল মুবহামত।
- শারহে সহীহ বুখারী অর্থাৎ সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যা।
- শারহে সুনানে আবী দাউদ অর্থাৎ আবু দাউদের ব্যাখ্যা । তাবাকাতে ফুকাহায়ে শাফিঈয়া।
- রিসালাহ ফী কিসমাতিল গানাইম।
- ফাতাওয়া ।
- জামিউস সুন্নাহ।
- খুলাসাতুল আহকাম।
- মানাকিবুশ শাফিঈ।
- বুস্তানুল আরিফীন।
- মুখতাসার উসুদুল গাবাহ।
- রিসালাতু ইসতিবাবিল কিয়াম লি আহলিল ফাল।
ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি কেবল একজন আলিম ও মুহাদ্দিস হিসেবেই খ্যাত ছিলেন না, তাঁর উন্নত চরিত্র, তাকওয়া ও আনড়ম্বর জীবন যাপন সমকালীন ইসলামী সমাজে আদর্শ হিসাবে গৃহীত হয়েছিল। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবন-যাপন প্রণালীকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে তিনি অত্যন্ত সাদামাটা আহার করতেন এবং মোটা কাপড় পরতেন।
শিক্ষিত- অশিক্ষিত, আমীর-গরীব সবাই তাকে সম্মান করতেন। কিন্তু দুনিয়ায় এত সম্মান লাভ করার পরও তিনি কখনো অর্থ, সম্মান, পদ ও ক্ষমতার পেছনে ছোটেননি। সারাজীবন তিনি কখনো সরকারী অর্থ ও সহায়তা গ্রহণ করেননি। কারো থেকে কোন দান গ্রহণ করেননি।
সারা দিন কেবল ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ব্যয় করতেন অথবা ইবাদাত-বন্দেগী করতেন। সারা দিন-রাতের মধ্যে মাত্র একবার খেতেন, তখনি পানি খেতেন। তার ছাত্রসংখ্যা ছিল অসংখ্য। ইমামের ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তী কালে খ্যাতি অর্জন করেন।
রিয়াদুস সালেহীন বাংলা (সকল খন্ড) PDF Download
শেষ কথা
Rate This Article
Thanks for reading: রিয়াদুস সালেহীন (সকল খন্ড)। Riyadus Salehin Bangla PDF Download , Sorry, my English is bad:)