মুহাম্মদ মুরসি ; এক মহানায়কের জীবনবৃত্তান্ত। dr. mohamed morsi biography। Alfamito Blog

মুহাম্মদ মুরসির জীবনি, মুহাম্মদ মুরসির রাজনৈতিক কার্যক্রম, dr. mohamed morsi biography
Alfamito Blog
সূচিপত্র

যৌবনের সোনা-রোদ্দুর দুপুর থেকে ইখওয়ানের সংগ্রাম-সাধনার উদ্দীপ্ত মিছিলে নিজেকে যুক্ত করেন রাষ্ট্রনায়কসুলভ বিচক্ষণতার বৈশিষ্ট্যে অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব কুরআনে হাফেজ ড. মুহাম্মদ মুরসি রহমতুল্লাহি আলায়হি। ব্যক্তিগত জীবনাচরণে ছিলেন বিনয়ী, কোমল ও দরবেশ স্বভাবের। ভাড়া বাসায় থাকতেন। সরকারি ও প্রশাসনিক কাজগুলো রাষ্ট্রপতি প্রাসাদে করলেও রাষ্ট্রপতির জন্য নির্ধারিত কোনো প্রাসাদেই তিনি থাকেননি। ব্যক্তিগতজীবনে যতটা বিনয়ী ও কোমল, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে ছিলেন ততোটা অতুল প্রতাপ ও অমিত প্রভাবশালী। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি দুরন্ত ক্ষিপ্রতায় নিজের যোগ্যতা, দূরদর্শিতা ও অসাধারণ নেতৃত্বগুণে নিজেকে উদ্ভাসিত করেছেন। 

মুহাম্মদ মুরসি

মুহাম্মদ মুরসির জীবনি

প্রশ্ন উত্তর
নাম মুহাম্মদ মুরসি
শিক্ষা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসস, ধাতব প্রকৌশলে এমএস, পিএইচডি ক্যালিফোর্নিয়া
জন্মস্থান এল আদওয়াহ, শারকিয়া গভর্নরেইট, মিশর রাজ্য
প্রসিদ্ধি ৫ম মিশরের প্রেসিডেন্ট [রাষ্ট্রপতি]
জন্ম ৮ আগস্ট ১৯৫১ খ্রি।
মৃত্যু ১৭ জুন, ২০১৯​ খ্রি।
স্ত্রি নাগলা আলী মাহমুদে

শৈশবের কুহেলি

মুহাম্মদ ইসা আল-আইয়াত মুরসি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উত্তর মিশরের আশ-শারকিয়্যাহ আল-আদওয়া গ্রামে ৮ আগস্ট ১৯৫১ সালে তাঁর প্রথম চোখ উন্মীলন। বাবা কৃষি কাজ করতেন। মা ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই দুই বোনের পরিবার। শৈশবে মুরসি ঘোড়ার পিঠে করে স্কুলে যেতেন। কিন্তু মুরসির শৈশব আর সকল শিশুর মতো খুব সুখের ছিল না।

 দারিদ্রের কষাঘাত তাঁকে ব্যখিত করত। সমাজের ধনাঢ্য লোকদের রূঢ় আচরণ শৈশবেই তাঁকে বিনীত করেছিল দরিদ্র মানুষদের মায়ায়। মুরসি সেই থেকে স্বপ্ন ও গৃহহারা মানুষদের মায়ার তাড়িত হয়েছিলেন। জীবন-সংগ্রামের পাঠ চুকিয়েছিলেন। সেই দুধ-শৈশবেই। বীজ বুনছিলেন সমতা ও মমতার পৃথিবী গড়ে তোলার। মেধাবি মুরসির হৃদয়ে তখনই বেজে উঠেছিল মানুষের প্রেমের সিম্ফনি।

শিক্ষা-দীক্ষা

প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষা আল-আদওয়ার স্কুলে। সেখানকার গ্রামীণ পরিবেশের রোমাঞ্চ মুরসিকে টেনে ধরতে পারেনি তাঁর বালক বয়সে। দেশপ্রেম আর মানবতার হাহাকারে মুরসি নিভৃতে পরাভূত হতে থাকতেন। 

একান্তে একাড়া হতেন মানবতা ও ইসলাম কায়েমের স্বপ্নে। সেই মোহ তাঁকে পেছনে ফিরে তাকানোর সময় দেয়নি কোনো দিন, তাঁকে সময় দেয়নি জালেমের চোখ দেখে ভয় পাবার।

স্বপ্নের পথে 

 বিশ্ববিখ্যাত কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বার সুযোগ হয়ে যায় মুরসির। ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হন। প্রথম বর্ষেই ফার্স্ট হয়ে যান মুরসি। স্বপ্নের পথ যেন দীর্ঘ হয় শুধু। ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ হয়ে যায় তাঁর স্বপ্ন বোনেন এইবার তাহলে পথ আমাকে ছুড়বে না, পদ্ম যেখানে যাও নিয়ে যাও তোমার নদী, তোমার আগত গন্তব্য। বিপ্লবের ঘ্রাণে ঘ্রাণে ছুটে চলেন মুরসি, ছুটে চলেন সূর্যের সাক্ষাতে কথা হবে এইবার মানুষের হাসি-বিষয়ক সূর্যালোকে আলাপানুষ্ঠান।

উত্তাল হৃদয়

স্বপ্নের নাকাড়া যেন বেজেই চলেছে। কিন্তু সব স্বপ্নই যে পথের জন্যে নয় তা বুঝেছিলেন। জিনিয়াস মুরসি। এর জন্যেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে আবার ফিরে আসেন আপন চিন্তাযানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। এরপর আবারও শৈশবের সমুদ্রে চোখ হারিয়ে যায় তাঁর। এখনই কি উঠে যাবেন রাজনীতির মধ্যে, নাকি আর পাহাড় দেখতে হবে তাঁর হৃদয়ে তরঙ্গ দোলা দিয়ে যায়, ইনসাফের পৃথিবী গড়বার।

আরও এক কদম 

ভর্তির সুযোগ হয়ে যায় বিশ্বখ্যাত ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে, তা সে বছরের সেরা স্কলারশিপ নিয়ে। আমেরিকার সাউথ ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির সেরা ছাত্রদের তালিকায় স্থান পাওয়া মুরসি অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে দেশে ফেরেন স্বপ্নের তাগাদায় জনবিস্ফোরণের ফানুস হওয়ার চুম্বক- টানে।

শিক্ষাদান ও শিক্ষকতা

 কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মুরসি অধ্যাপনা জীবনের শুরু হলো ঐতিহ্যবাহী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। পরে আরও বড় সুযোগ এসে যায়, অর্থাৎ শিক্ষক হয়ে যান। বিশ্বনন্দিত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। এছাড়াও বিশেষত আমেরিকা এবং পৃথিবীর স্বনামধন্য একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। 

অবশেষে মিশরের জাকাজিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ধাতু প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হয়ে অধ্যাপনা জীবনের ইতি টানেন। বিজ্ঞানী জীবনে নাসায় কাজ করেছেন। 'স্পেস শ্যাটল ইঞ্জিন উন্নয়নে সফলতম ভূমিকা রাখায় বিজ্ঞান-দুনিয়ায় দ্রুত তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। সুযোগ পান বিভিন্ন বিজ্ঞান-সেমিনারে অংশগ্রহণের। বড় বড় বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় তাঁর প্রবন্ধ ছাপবার অনুরোধ আসতে থাকে। তাঁর রচিত প্রবন্ধ ও তাঁর সুচিন্তক বক্তব্য বিজ্ঞানী দুনিয়ায় অনুকরণীয় হয়ে আছে এখনও।

মুহাম্মদ মুরসির পরিবার

১৭ বছর বয়েসী চাচাতো বোন নাজলা মাহমুদকে বিয়ে করেন মুরসি। নাজলা মাহমুদ অদ্ভুতরকম ভালোবাসতেন আইয়াত মুরসিকে। মুরসির ব্যক্তিত্ব ও সদাচরণ নাজলাকে অনুরণিত করেছিল মুরসির প্রতি। মুরসির ভালোবাসার স্বপ্নভুবনে হারিয়ে যাবার আকাঙ্ক্ষা নাজলাকে সঞ্চার করত রোমাঞ্চ। তাঁরা ঘর বাঁধেন। গড়ে ওঠে তিলে তিলে। 

মোমগলিত প্রেমের পৃথিবী। হারিয়ে যান নাজলা ও মুরসি, তা দিনে দিনে আরও প্রাণসঞ্চারী হয়ে ওঠে। নাজলা বলেন, 'মুরসির সবকিছুকে আমি ভালোবাসতাম। আমাদের বাগড়া কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হতো না। ঘরের টুকিটাকি কাজ ও রান্নাবান্নায় মুরসি আমাকে সহায়তা করতেন। মিসরের এক টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে মুরসি বলেন, 'নাজলাকে বিয়ে করা ছিল আমার।

 জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য।' নাজলা ও মুরসির সফলতম সংসারে পাঁচ সন্তান জন্ম নেন, আহমাদ, শায়মা, উসামাহ, উমার, আবদুল্লাহ।

রাজনীতিতে অবতরণ

ইখওয়ানুল মুসলিমিন আরব ও বিশ্ব-রাজনীতির আলোচিত একটি নাম। পশ্চিমামুখী মুরসি যখন পশ্চিমি ত্রাসের রাজনীতি বুঝে গেলেন, তখন তাঁর জন্য গুরুত্ববহ ছিল একটি বলয়। ইখওয়ানকেই তিনি সেই হকের ওপর দাঁড়ানো হিসেবে শনাক্ত করেছেন। যোগ দিলেন ১৯৭৭ সালে ইখওয়ানে। ইখওয়ানের আন্দোলন তাঁর সপ্রতিভ ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় দ্রুতই আরববিশ্বে প্রভাব ফেলতে লাগল।

 আরবের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক প্রভাবের মুখে ইখওয়ান নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ল ইজরায়েল ও পশ্চিমাশক্তি। এরই ধারাবাহিকতায় ষড়যন্ত্রের একপর্যায়ে পশ্চিমা মিডিয়া ইখওয়ানকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে ফেলল। কিন্তু আরববিশ্বে এখন পর্যন্ত অগোচরে ইখওয়ানের শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। ব্যাপক জনপ্রিয় মুরসি ২০০৫-এ সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পরও তাঁর বিরোধী প্রার্থীকে জয়ী দেখানো হয়। ১৯৯৫ ও ২০০০ সালেও ইখওয়ানের এমপি নির্বাচিত হয়ে সংসদে নেতৃত্ব দেন মুরসি।

মার্কিন শয়তানি যেভাবে প্রতিফলিত হয় আরব বসন্ত মূলত মার্কিন প্রকল্প। বুআজিজি নামক তিউনিসীয় ফেরিওয়ালার নিজ গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে যে ক্ষোভ আর দ্রোহের জন্ম নেয় আরব জন-মানসে, তারই সুযোগ নেয় পশ্চিমাগোষ্ঠী। পশ্চিমা লালিত মিডিয়া এর নাম দেয় 'আরব বসন্ত'। 

আরবের মানুষ আশায় উদ্বেলিত হয়েছিল, জাগরণের মশাল উদ্দীপু করেছিল তাদের, কিন্তু পশ্চিমাশক্তি মূলত নিজস্ব দালালদের ক্ষমতায় বসাতেই আরব বসন্তের নামে উচ্চে দিয়েছিল আরবের শান্তিকামী জনতাকে। অবশেষে আরব বসন্ত রূপ নিনতাদেরই পরিকল্পিত রূপে। অস্থির অশান্ত হয়ে উঠল আরবের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। তিউনিসিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, বাহরাইন ও সিরিয়াও জ্বলতে লাগল রাষ্ট্রীয় অস্বস্থির দাবানলে। এরই ফলশ্রুতিতে মিশরেও ধাক্কা লাগল বড়সড়। 

অশান্তির আগুনে পুড়তে থাকল মিশরও। মুরসি তখন আরব ভূমির দাবদাহ-মৃত্তিকায় পানি ঢাললেন যেন, মিশরকে নিয়ে আসলেন শান্ত নদীর ভূমিকায়। সর্বদলীয় মোর্চা 'ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস' গঠন করে ইখওয়ানকে নিয়ে আসেন সংসদে। আর এটাই ইখওয়ানের জন্ম হে যায় বৈশ্বিকভাবে।

নতুন মিশর

২০১২ সালে অনেক ষড়যন্ত্রের পরও অবশেষে নির্বাচন কমিশন তাঁর বিজয় ঘোষণা করতে বাধ্য হলো। নিয়মানুযায়ী তিনি ব্রাদারহুড ও ফ্রিডম পার্টি থেকে পদত্যাগ করলেন। শুরু হলো নতুন মিশরের পথচলা। রাশিয়া, চীন, ইরান, তুরস্কসহ বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্যে পরামর্শ করলেন মুরসি, কিন্তু আমেরিকায় গেলেন না। 

মিশরকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণসহ শিক্ষা ও সামগ্রিক উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত স্থানে নিয়ে যান। বৈশ্বিক রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেন শান্তিকামী নেতার ভূমিকায়। এরদোগানকে নিয়ে ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার সমস্যা দূরীকরণে শত্রু হতে থাকেন। এতে ইসরায়েল ভয় পেয়ে গেল। ক্ষোভে দক্ষ হতে লাগল আমেরিকা। সৌদ পরিবার আরবের নেতৃত্ব হারাবার ভয়ে আঁটতে লাগল ফন্দি। তাঁরই নিয়োগকৃত সেনাপ্রধান দালাল আবদেল ফাত্তাহ সিসিই তাঁকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করল। শুরু হলো নব্য ফেরাউনি শাসন।

ভিন্নতা ও অনন্যতা

মুরসি তো পণ্ডিত মানুষ ছিলেন, চাইলেই সম্ভব ছিল বিপুল ঐশ্বর্য আর সৌখিন জীবনযাপন করার। দুনিয়ার আর সব বিজ্ঞানীদের মতো তাঁর জীবনও হতো রাষ্ট্রীয় মায়ায় প্লাবিত। সুখ আর ধনে আয়েশি মখমল দিন হতো তাঁর। চিরায়ত অগ্নিবিপক্ষ জীবনযাপন করে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু মুরসি পথ বেছে নিলেন সংগ্রামের। 

রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ছড়িয়ে দিলেন ঈমানের সদা প্রোজ্জ্বল দাবানল, হাসানুল বান্নার ইশতিহার। মিছিলে মিছিলে রক্ত রঙে স্নাত হলো তাহরির স্কয়ার। মিশর দেখল সূর্যের রঙ তার মাথার ওপর ছড়িয়ে, সূর্য মিশরের আকাশ ছাপিয়ে আলো ফেলল সুদূর সিরিয়ায়। সিরিয়া চেয়ে আছে, মিশর হাসছে, জ্বলে শেষ ইসরাইল, জ্বলে শেষ বীভৎস দুনিয়ার সূতিকাগার আমেরিকা।

মুহাম্মদ মুরসির ম্ত্যৃ

নির্জন কারাবাস শেষে ২০১৬ সালে তাঁকে কায়রোর কুখ্যাত তোরা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। গত ১৭ জুন আদালতে বিচার শুনানির ফাঁকে কারাকক্ষের খাঁচার চতুরে পড়ে যান মুরসি। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে মিসরের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির মৃত্যু ঘটে। কিন্তু তাঁকে পূর্বেই অমানবিক নির্যাতন ও প্রমুখ প্রয়োগের মাধ্যমে শেষ করে দেয়া হয়, ধু আনুষ্ঠানিক মৃত্যু ঘটানো হয় আদালতে এনে। 

তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহিতার। কিন্তু জনতার কাছে মুরসি নতুন করে জ্বলে উঠলেন। সারা বিশ্বে তাঁকে নিয়ে যে আলোড়ন, তাঁর প্রয়াণে যে শোকাবহ বিরাজ করছে তা তাঁর অসম্পাদিত নতুন বিপ্লব বাস্তবায়নেরই আগাম বার্তা ।

মুহাম্মদ মুরসির রাজনৈতিক কার্যক্রম

২০০০ সালে মিশরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুরসি। সাংসদ হিসেবে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মিশরের সংসদে বহাল ছিলেন। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময়ে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখার কারণে মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ২০১১ সালে মিশরে গণ-আন্দোলন শুরু হলে তা নস্যাৎ করতে মুরসিসহ মুসলিম ব্রাদারহুডের ২৪ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এতে আন্দোলন আরও তীব্র হয়। মুরসিকে মুক্ত করতে কারাগারে হামলা করে। 

ক্ষুব্ধ জনতা। কারাগারের দেয়াল ভেঙে তাঁকে মুক্ত করে নিয়ে আসে তারা। এর আগেও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবিতে সংঘটিত আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন মুরসি। এ সময় তাঁকে সাত মাস জেলে রাখা হয়।্রর

২০১২ সালে ইখওয়ানের বিকল্প রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে মুরসির নাম ঘোষণা করা হয়। পরে মূল প্রার্থী বাদ পড়লে তিনি নির্বাচন করেন। এবং ২০১২ সালের জুনে মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়নে ড. মুরসি ছিলেন ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা) বিকল্প প্রার্থী বা দ্বিতীয় পছন্দ।

 দু'দফায় অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবার আগে মিশরে তাঁর আহামরি কোনো যশ-খ্যাতি ছিল না। ইখওয়ানের প্রধানও তিনি ছিলেন না।

প্রেসিডেন্ট মুরসির প্রথম ভাষণ

 নির্বাচনে এক কোটি ৩২ লাখ একশ' ২১ ভোট প্রাপ্তির খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাহরির স্কোয়ারে সমবেত জনতার উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। যা বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। তাঁর সেই ভাষণ ছিল। মৌলিক, সুচিন্তিত, সুগভীর প্রজ্ঞাপ্রসূত। দীপ্ত পায়ে মঞ্চে উঠে উদ্দীপ্ত কণ্ঠে সেদিন বলেছিলেন-'আমি কোনো দলের নই, মিশরীয়দের প্রেসিডেন্ট। জাস্টিস অ্যান্ড ফ্রিডম পার্টির পদ ও কেন্দ্রীয় দায়িত্ব থেকে এখনই ইস্তফা দিলাম। এ মিশর সকল মিশরীয় অধিবাসীর। 

অধিকারের প্রশ্নে সকলে সমান । আমার কোনো অধিকার নেই, আছে কেবল দায়িত্ব। মিশরের খ্রিস্টান, মুসলমান-সব মিশরীয়কে জাতীয় সংস্কৃতি ও উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। নাগরিক মর্যাদা, স্বাধীনতা, মানবাধিকারের সম্মান, নারী ও শিশুদের জন্য সকলকে কাজ করতে হবে। আমরা সারা বিশ্বকে শান্তির বার্তা শোনাতে


চাই। বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিশরের সম্পাদিত সকল চুক্তি ও অঙ্গীকার আমরা রক্ষা করব। বাইরের কোনো রাষ্ট্রকে আমরা নিজেদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ দেবো না। আমরাও কারও আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করব না। যদি আল্লাহর রহমত বর্ষিত না হতো, আমাদের সম্মানিত শহীদ ও আহত ভাইয়েরা যদি বুকের তাজা রক্ত না ঢেলে দিতেন তবে আমি মিশরের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনাদের সম্মুখে এভাবে ভাষণ দেয়ার সুযোগ পুোম না। 

সকল শহীদের উদ্দেশে বিনম্র সালাম জানাচ্ছি। তাঁদের উত্তরাধিকারী ও পরিবার-পরিজনকেও সালাম জানাই। তাঁদের প্রিয়জনেরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। 

যেসব মহান লক্ষ্য সামনে রেখে বিপ্লব হয়েছে তা অর্জনে আমাদের যাত্রা অব্যাহত থাকবে...।' ড. মুহাম্মদ মুরসি শপথ গ্রহণের পর প্রথম দিন যখন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সিন্ধান্ত নেন তখন নিরাপত্তা বাহিনী মসজিদের দরোজায় একটি বৈদ্যুতিক দরোজা বসিয়েছিল যাতে প্রবেশকারী প্রত্যেক মুসল্লির স্বয়ংক্রিয় তল্লাশি হয়ে যায়। রাষ্ট্রপতি মুরসি এই পদক্ষেপের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তা বাতিল করে দেন। 

জামিউল আজহারের খতিব ড. মুরসিকে ইসলামের উদ্দীপ্ত সোনালি ঐতিহ্য অনুসারে উপদেশ, ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা আমিরুল মুমিনিন হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রা.-এর কর্মনীতি ও সেবামূলক সুশাসনের বিবরণ এবং এর আলোকে ড. মুহাম্মদ মুরসির কাছে জাতির প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে এমন জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন যে, মুরসি অঝোর ধারায় কাঁদলেন। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব এবং জাতীয় প্রত্যাশার ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট ওয়াকিবহাল।

জনসাধারণের সাথে মুরসির উদারতা

 'আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে, আমার চিরচেনা মিশর এমনও হতে পারে! আমি তো স্বপ্নেও ভাবিনি যে, আমি মিশরের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারব। যিনি মিসরের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি, তবে মিশরীয় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি।

আমার সামনে একজন - বিনয়ী আর বিনম্রভঙ্গিতে আলাপরত ব্যক্তিকে দেখে আমি দ্বিগুণ বিস্ময়ে থ বনে গেলাম। তখন আমার বিস্ময়ের সীমা ছিল না যখন দেখি। মিশরের রাষ্ট্রপতির জামার আস্তিন ধরে একটি ছাত্রী বলছেন-“আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন!" মিসরের প্রেসিডেন্ট বলছেন, “আমি হাজির হয়েছি।" তাঁর ঘর ছিল চাপা, অথচ তাঁর দুইপাশে তখন পূর্ণ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলেন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাগণ। 

রাষ্ট্রপতি যখন আমার দিকে দৃষ্টি দিলেন, তখন আমি প্রায় অনুভূতিরহিত। তিনি জানতে চাইলেন, "আপনার কি আর্থিক সহায়তা দরকার না ব্যক্তিগত ভাতা? আপনার প্রয়োজন যাই হোক আমাকে নির্দ্বিধায় বলুন। ” আমি বললাম, “আমার নিজের জন্য কিছু চাই না, আগুনে পুড়ে যাওয়া আমার ছেলেটিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে চাই, যে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজি হচ্ছে না।" প্রেসিডেন্ট বললেন, "আমি রোগীকে দেখতে চাই।

 আমাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করিয়ে দিন। " গাড়িতে শায়িত আমার ছেলেকে নিয়ে আসা হলে তিনি তার কপাল চুম্বন করলেন। তার জন্য পুনর্বার পানীয় আনালেন। অতঃপর হাসপাতাল পৌঁছানোর জন্য সরকারি গাড়ি আনতে নির্দেশ দিয়ে আমার সঙ্গে একজন সরকারি কর্মকর্তাও দিলেন। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না, আমাদের মিশর

এমনও হতে পারে।' এ ঘটনার পর লোকটি দুহাত তুলে হৃদয় উজাড় করে ড. মুহাম্মদ মুরসির জন্য দোয়া করলেন। ঘটনাটি বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ সামির তাঁর ফেসবুকে বর্ণনা করেন। লোকটির। যুবক ছেলের শরীরের ৪০%-এরও বেশি জ্বলে গিয়েছিল।

 ডা. সামির বলেন, 'রোগীর অবস্থা দেখে আমি তাকে ভালো চিকিৎসার জন্য বড় কোনো হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ। দিয়েছিলাম, যেখানে তার প্রয়োজনীয় সুবিধাদি মিলবে এবং পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি সুলভ। আমি ভর্তি করতে অপারগতা প্রকাশের কারণে ভারা হাসপাতাল প্রধানের কাছে ছুটে যায়। 

তিনি আমাকে ডেকে পাঠালে সেখানেও আমি রোগীর অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে একই কথা বলেছি। হাসপাতাল থেকে চলে যেতে যেতে রোগীর আত্মীয়-স্বজন ধমকের সুরে বলছিল, কেবল মিশর সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তারা আমার ব্যাপারে অভিযোগ দেবেন। তাদের কথা শুনে আমি স্মিত হাসছিলাম কিন্তু অল্পক্ষণ পরেই আমার হাসি হারিয়ে গেল। 

চোখের সামনে দেখলাম রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে পাঠানো একটি গাড়ি বারান্দায় দাঁড়ানো। গাড়ি থেকে নেমে আসা একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা আগুনে পোড়া সেই রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি এবং সর্বোচ্চ সেরা নিশ্চিত করার রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা শোনালেন। এখন আমার পক্ষে তাকে ভর্তি না করিয়ে আর কোনো উপায় থাকল না।

ডা. সামির আরো লিখছেন, 'পুরোদমে গুরুত্বের সঙ্গে রোগীর চিকিৎসা আরম্ভ হয়েছে। এরই ফাঁকে একদিন আমাকে পুড়ে যাওয়া এই যুবকের পি মিশরের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের ইতিবৃত্ত শোনালেন। এবং পরে এটাও বলতে ভুললেন না যে, “আমার ছেলের যথাযথ চিকিৎসায় কোনো গাফলতি হলে আমিই প্রথম তাহরির স্কোয়ারে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে নেমে পড়ব। 

গুরুত্বপূর্ণ কোনো এক অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, গাড়িতে বসে আছেন মুরসি। একজন বাস্ত বিধবা কায়রোর সড়কে শুয়ে আছেন। মুরসির তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তা এড়ায়নি। বিধবার পাশে এসে গাড়ি থামল। গাড়ি থেকে রাষ্ট্রপতি মুরসি নেমে এসে তাঁর কাছে বসলেন। তাঁকে প্রশ্ন করলেন, কেন তিনি রাস্তায় থাকেন? মহিলা জানান, তিনি বাড়িভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় বাধ্য হয়ে বাসা ছেড়ে দিয়ে এখন রাস্তায় এসে আবাসন গড়েছেন। 

মুরসি জানান, তার নেতৃত্বাধীন মিশরের সড়কে কেউ এভাবে থাকতে পারলেন না। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সেই মহিলার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। সেই সাথে সরকারের তরফ থেকে মহিলার জন্য একটি ভাতা সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। এই সেই মুরসি। জনসাধারণের জন্য যাঁর উদারতা ছিল বিশাল আকাশের ন্যায়।

 অবাধে ও সহজে একজন সাধারণ মানুষ চাইলেই পেৰো যেত তাঁর আশ্চর্য স্নিগ্ধ সাক্ষাত। যেকোনো শ্রোতা মুহূর্তে বিমুগ্ধ হতো তাঁর অন্তরঙ্গ মধুর মজমায়।

মুরসির পতন

২০১৩ সালের জুলাই পর্যন্ত ১ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে মুরসির বিরুদ্ধে মিশরকে ইসলামিকরণের অভিযোগ ওঠে। সে সময় তাঁর ইসলামপন্থি সংবিধান প্রণয়নের চেষ্টা গ্রহণযোগ্য হয়নি ধর্মনিরপেক্ষ ও উদারপন্থীদের কাছে। তাঁর দ্রুত অর্থনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগও সমালোচিত হয়। এ সময় মুরসি ইরানের সঙ্গে মিশরের সম্পর্ক জোরদার করতে উদ্যোগ নেন। নির্যাতিত-নিপীড়িত ফিলিস্থিনিদের পাশে দাঁড়ান। দখলদার ইসরাইল কর্তৃক অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জন্য মিশরের সীমান্ত খুলে দিয়ে জেরুজালেম ও আল-আকসা মসজিদের ওপর ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণের পক্ষে অবস্থান নেন। 

এসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে পীড়া দেয়। ফলে বৈশ্বিক রাজনীতির এক সূক্ষ্ম গড়যন্ত্রের বেড়াজালে আটকা পড়েন মুরসি। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে দেখা দেয় আভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ। তাঁর এক বছরের শাসনকালে হোসনি মোবারক আমলের যেসব ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রের গুরত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেন তিনি, তারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

আরব বসন্তের সময় গণতন্ত্র-বিরোধী বেশ কিছু সেনাকর্মকর্তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে চেষ্টা করেছিলেন মুরসি। আর এসব কারণে সেনাবাহিনীর শক্তিশালী অংশ মুরসির বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে। আর এতে ইন্ধন যোগানো ও কলকাঠি নাড়ানোর কাজটি করে ইসরাইল ও আমেরিকা। ২০১৩ সালে মুরসির বিরুদ্ধে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। 

তাহরির স্কয়ারেই মুরসির বিরুদ্ধে জড়ো হয় মানুষ। এই সুযোগে সংবিধান স্থগিত করে মুরসিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে কারাগারে বন্দী করে দেশটির সেনাবাহিনী। আর এসবের পেছনের মূল হোতা ছিল মুরসির হাত ধরে দেশটির সেনাপ্রধান হওয়া আবদেল ফাত্তাহ সিসি।

 মুরসিকে কারাবন্দী করে মসনদ দখল করে সে। ক্ষমতায় থাকার সময় 'আদালত অবমাননা'র অভিযোগ আনা হয় মুরসির ওপর। এরপর ২০১৬ সালের জুন মাসে তথ্য পাচারের এক মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মিশরের নিম্ন আদালত। মুরসি ও তাঁর সহযোগী ইখওয়ানের কয়েকজন নেতা কাতারে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচার করে জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিলেন-এমন অবান্তর। 

অভিযোগে মুরসিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। এভাবেই থেমে যায় মজলুম নেতা ড. মুহাম্মদ মুরসির রাজনৈতিক সংগ্রামী জীবনের বিক্ষুব্ধ স্রোতধারা। একটি সবুজ তীরে পৌঁছার আগে ডুবে যায় তাঁর জীবনতরী। 

ওমর রাদি-এর সেই শ্রোতবাহী নীলনদ ও নবি মুসা আলায়হিস সালামের মিশর ফিরে পেতে সংগ্রাম ও সাধনায় ব্রতী হয়েছিলেন যে রাষ্ট্রনায়ক, মাঝপথে তাকে থামিয়ে দেওয়া হয় গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। কারা অন্তরীণে নীরবে চলে যান সংগ্রামী নেতা মুরসি, কিন্তু চিরকাল তাঁর চরিত্র-প্রভায়, জ্ঞান-গরিমায় ও বীর্য-মহিমায় সবাই মুগ্ধতার সরোবরে অবগাহন করে কুঁড়িয়ে নেবে অমূল্য জীবনের সওগাত।

Rate This Article

Thanks for reading: মুহাম্মদ মুরসি ; এক মহানায়কের জীবনবৃত্তান্ত। dr. mohamed morsi biography। Alfamito Blog , Sorry, my English is bad:)

Getting Info...

Post a Comment

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.